অস্টিওপরোসিস নিয়ে কিছু কথা

0

অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধযোগ্য যদি প্রাথমিক পর্যায়ে সচেতন হওয়া যায়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করলে এই রোগ এড়ানো সম্ভব। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করাও জরুরি

অস্টিওপরোসিস হলো এমন একটি রোগ যেখানে হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়, ফলে সহজেই ভেঙে যেতে পারে। সাধারণত বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে, কিন্তু অস্টিওপরোসিসে এটি মাত্রাতিরিক্ত হারে কমে যায়। এটি বিশেষ করে বৃদ্ধ, নারীরা (বিশেষ করে মেনোপজ-পরবর্তী সময়ে) এবং ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর অভাবগ্রস্ত ব্যক্তিদের বেশি হয়।

অস্টিওপরোসিসের কারণ :

১. বয়স বৃদ্ধি : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে, বিশেষ করে ৫০ বছর পর। ২. জেনেটিক কারণ : যদি পরিবারে কারও অস্টিওপরোসিস থাকে, তবে ঝুঁকি বেশি থাকে।

৩. হরমোনের পরিবর্তন : মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে যায়, যা হাড়ের ঘনত্ব হ্রাস করে। ৪. খাদ্যাভ্যাস : পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড় দুর্বল হয়ে যায়। ৫. জীবনধারা : নিয়মিত ব্যায়াম না করা, ধূমপান ও মদ্যপান হাড়ের ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ায়। ৬. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া : স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করলে হাড় দুর্বল হয়। ৭. অন্য কোনোরোগের প্রভাব : ডায়াবেটিস, কিডনি রোগের কারণে হাড় দুর্বল হতে পারে।

অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ ও প্রতিকার :

সঠিক খাদ্যাভ্যাস : ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (দুধ, দই, শাক-সবজি, বাদাম) খেতে হবে। ভিটামিন ডি-এর জন্য সূর্যের আলো এবং ডিমের কুসুম, সামুদ্রিক মাছ খাওয়া জরুরি।

নিয়মিত ব্যায়াম : ওয়েট লিফটিং, ওয়াকিং, দৌড়ানো ও ইয়োগা করা যেতে পারে।

জীবনধারার পরিবর্তন :

ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলা উচিত। অতিরিক্ত ক্যাফেইন (চা, কফি) ও অতিরিক্ত সফট ড্রিংকস পরিহার করা উচিত।

ওষুধ ও চিকিৎসা : ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে বিসফসফোনেটস ওষুধ দেওয়া হয়, যা হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।

উপসংহার : অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধযোগ্য যদি প্রাথমিক পর্যায়ে সচেতনতা নেওয়া যায়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করলে এই রোগ এড়ানো সম্ভব। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করাও জরুরি। তাই হাড়ের এসব রোগ বালাই নিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নিলে অনেক জটিলতা এড়ানো যেতে পারে।

লেখক : অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও ট্রমা সার্জন, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), ঢাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here