গ্রাহাম হিউমের বলটি তুলে মারলেন কুসাল মেন্ডিস। টাইমিংও হলো বেশ, কিন্তু যথেষ্ট উঁচুতে তিনি ওড়াতে পারলেন না বল। লং অফ সীমানায় লাফিয়ে ক্যাচ নিতে গিয়ে শুরুতে ভারসাম্য রাখতে পারলেন না ফিল্ডার ম্যাথু হামফ্রেজ। বল শূন্যে ছুড়ে তিনি বাইরে চলে গেলেন, পরক্ষণেই ভেতরে ঢুকে আবার মুঠোয় জমালেন বল। টিভি আম্পায়ার রিপ্লে দেখে নিশ্চিত করলেন, ক্যাচ বৈধ। স্রেফ কয়েক ইঞ্চির জন্য ছক্কার বিশ্বরেকর্ড স্পর্শ করতে পারলেন না মেন্ডিস।
বল আরেকটু ওপর দিয়ে গেলেই সেটি হতো মেন্ডিসের দ্বাদশ ছক্কা। কিন্তু গল টেস্টের চতুর্থ দিনে বৃহস্পতিবার হামফ্রেজের দারুণ ক্যাচে লঙ্কান ব্যাটসম্যান থমকে গেলেন ১১ ছক্কাতেই। অক্ষত রইল ওয়াসিম আকরামের ১২ ছক্কার রেকর্ড। ডাবল সেঞ্চুরির আক্ষেপ অবশ্য এ দিন ঘুচিয়ে ফেলেন মেন্ডিস। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৯৪ রানে আউট হয়েছিলেন তিনি, ২০১৮ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষেই ফেরেন ১৯৬ রানে। এবার ক্যারিয়ার সেরা ২৪৫ রানের ইনিংস খেললেন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।
প্রথমবার এতটা কাছাকাছি গিয়েছিলেন ন্যাথান অ্যাস্টল। ২০০২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া স্মরণীয় সেই ইনিংসে ম্যাথু হগার্ডের বলে একাদশ ছক্কাটি মারেন নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যান। এক বল পরই তিনি ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে। ২৮ চার ও ১১ ছক্কার ইনিংস থামে ১৬৮ বলে ২২২ রান করে। পরের বছরই আবার আকরামের রেকর্ড হুমকিতে ফেলে দেন ম্যাথু হেইডেন। ব্রায়ান লারার ৩৭৫ রানের বিশ্বরেকর্ড ভেঙে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পার্থে ৩৮০ রানে পৌঁছে যান অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান। ৩৮ চারের সঙ্গে তখন তার ছক্কা ১১টি। শেষ পর্যন্ত থামেন ওখানেই।
২০১৪ সালে পরপর দুই টেস্টে আকরামের রেকর্ড ছোঁয়ার খুব কাছাকাছি পৌঁছে যান ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। কিন্তু পারেননি একবারও। পাকিস্তানের বিপক্ষে শারজা টেস্টে ১৮৮ বলে ২০২ রানের ইনিংসের পথে ১১ ছক্কা মেরে তিনি বোল্ড হয়ে যান ইয়াসির শাহকে সুইপ করতে গিয়ে। পরের টেস্টেই ক্রাইস্টচার্চে ১৯৫ রান থেকে ছক্কা মেরে ডাবল সেঞ্চুরি করার চেষ্টাতেই তিনি আউট হয়ে যান। ১৩৪ বলের ইনিংস থামে ১৮ চার ও ১১ ছক্কা মেরে।
একটু ভিন্নভাবে একই পরিণতি হয় বেন স্টোকসের। ১১ ছক্কার ইনিংস তার শেষ হয় রান আউটে কাটা পড়ে। ২০১৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৪৬ থেকে কাগিসো রাবাদাকে টানা দুই বলে ছক্কা মেরে ১১ ছক্কা হয়ে যায় তার। পরের বলে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান তিনি। কিন্তু ওই বলেই রান নিতে গিয়ে হয়ে যান রান আউট। ৩০ চার ও ১১ ছক্কায় ১৯৮ বলে ২৫৮ করে বিদায় নেন ইংলিশ অলরাউন্ডার। এরপর এবার ১১ ছক্কায় থমকে গেলেন মেন্ডিস। বিশ্বরেকর্ড গড়তে না পারলেও শ্রীলঙ্কার রেকর্ডটি এখন মেন্ডিসেরই। আগের রেকর্ড ছিল কুমার সাঙ্গাকারার। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩১৯ রানের ইনিংসের পথে সাঙ্গাকারা মেরেছিলেন ৮ ছক্কা।