অর্থনৈতিক সংকট চরমে, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে এবার ফ্যান উৎপাদন বন্ধ করল পাকিস্তান

0

ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে চরম জ্বালানি সংকটে পড়েছে এশিয়ার দেশ পাকিস্তান। দেশটিতে বিদ্যুৎ সংকটও চরম আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে ঐতিহ্যবাহী ফ্যান উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে দেশটির ফেডারেল সরকার বুধবার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ১ জুন থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় বিদ্যুৎ সংরক্ষণ নীতির অংশ হিসেবে ঐতিহ্যবাহী ফ্যান উৎপাদন ও বিক্রির ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। শিগগির এ–সংক্রান্ত সরকারি সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রক আদেশ (এসআরও) জারি করা হবে।

৮০ ওয়াটের চেয়েও কম বিদ্যুৎ খরচ হয় শুধু এমন ফ্যান উৎপাদনের জন্য ন্যাশনাল এনার্জি এফিশিয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন অথরিটিকে (এনইইসিএ) অনুমোদন দেওয়া দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল অথরিটিকে (পিএসকিউসিএ) দেশে ফ্যানের জাতীয় মান সংশোধন করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্টার রেটিং ক্যাটাগরির প্রথম স্তরে থাকা ফ্যান এবং ৮০ ওয়াটের কম বিদ্যুৎ খরচ করে এমন ফ্যান দেশে উৎপাদন ও বিক্রির অনুমতি দেওয়া হবে। এসির ইনভার্টারসহ ফ্যানগুলো এই ক্যাগাটরির, এগুলো প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ ওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্যান উৎপাদনের জন্য পাকিস্তানের ফ্যান উৎপাদন শিল্পের প্রতিনিধিত্বকারী সমিতির সঙ্গে পরামর্শ করা হবে, যেন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাল্বের মতোই এই শিল্পকেও উন্নত করা যায়।

ক্রয়ক্ষমতার কথা মাথায় রেখে প্রতিটি পরিবারকে কিস্তিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্যান দেওয়ার প্রস্তাবও বিবেচনা করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমছেই। স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ৩ ফেব্রুয়ারি দেওয়া হিসাব অনুসারে, চরম আর্থিক সংকটে থাকা দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ১৭ কোটি ডলার কমে গেছে। এখন এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯০ কোটি ডলার। পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে অর্থ চায়। এ নিয়ে কথাবার্তাও হয়েছে। তবে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এ অর্থ ছাড় এখনো হয়নি, আলোচনায় আটকে আছে।

এই মুহূর্তে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। পাকিস্তানি রুপির দাম পড়তে পড়তে এখন ডলারপ্রতি ২৬৫ রুপি দাঁড়িয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ তলানিতে ঠেকেছে। ১৯৯৮ সালের পর থেকে এখন সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে রিজার্ভ। পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে চাপে সাধারণ মানুষ। আটা, ডাল, চাল, দুধ—সবকিছুরই দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। সূত্র: পাকিস্তান টুডে, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here