‘অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নয়নে চাই পারস্পরিক সহযোগিতার দিগন্ত প্রসারিত করা’

0

করোনার পর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধজনিত পরিস্থিতিতে লণ্ডভণ্ড বিশ্ব অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারে সহায়ক গবেষণামূলক প্রবন্ধ-নিবন্ধ উপস্থাপন, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম এবং আলোচনার মধ্যদিয়ে নিউইয়র্কে তিন দিনব্যাপী ‘১২তম ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট’ শেষ হলো ১২ এপ্রিল সোমবার। 

এই কনফারেন্সের উদ্যোক্তা যুক্তরাজ্যস্থ ‘সেন্টার ফর বিজনেস এ্যান্ড ইকনোমিক রিসার্চ’র নির্বাহী সভাপতি এবং কুমিল্লার বড়ুরা উপজেলার তলাগ্রামের সন্তান ড. পল্টু রঞ্জন দত্ত এবারের আয়োজন প্রসঙ্গে এ সংবাদদাতাকে বললেন, করোনার সময় আমরা সবচেয়ে বড় একটি শিক্ষা পেলাম, আর তা হচ্ছে মানবতার শিক্ষা। সেকেন্ডলি পৃথিবীতে এখন যে সবকিছু নিউ নর্মাল শুরু হয়েছে, সেটি হচ্ছে ডিজিটাইজেশন। অর্থনীতিতে বলুন, সামাজিক পরিস্থিতিতে বলুন, দার্শনিক ক্ষেত্রে, নান্দনিকতায় বলুন, সবটাই ডিজিটাল মুভমেন্টকে ত্বরান্বিত করছে। ড. পল্টু বলেন, করোনার সময় আমরা সশরীরে উপস্থিত হয়ে কনফারেন্স করতে পারিনি। ভার্চুয়ালে করেছি। তবে সেখানে অনেক কিছুরই প্রকাশ যথাযথভাবে ঘটেনি। তিন বছর পর আমরা এই প্রথম আবার শুরু করলাম সশরীরে উপস্থিতির কনফারেন্স। 

ড. পল্টু উল্লেখ করেন, আমরা চেষ্টা করছি বাংলাদেশ-সহ সারাবিশ্বে নাজুক অবস্থায় পতিত অর্থনৈতিক অবস্থার উত্তরণ ঘটানোর ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ ঘটাতে। ২০১৯ সালে আমরা বাংলাদেশেও কনফারেন্স করেছি। সে সম্মেলনে বিদেশী শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা অবাক হয়েছিলেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অগ্রগতির জোয়ার দেখে। করোনা পরবর্তী বর্তমানের জেগে উঠার পরিক্রমায় আমাদের সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে পারস্পরিক সহযোগিতার দিগন্ত প্রসারিত করার। এই সম্মেলনের প্রতিটি পর্বে সেই আকুতিই উচ্চারিত হয়েছে। 

‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট’র যুগপূর্তির এই কনফারেন্সের উদ্যোক্তা, জনক হিসেবে কতটুকু সফল হতে পেরেছেন বলে মনে করেন? জবাবে কনফারেন্সের এক্সিকিউটিভ চেয়ার ডক্টর পি.আর. দত্ত বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র জুনিয়র একাডেমিশিয়ানদের মধ্যে একটা জাগরণ সৃষ্টি করা। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত তথা এশিয়ার শিক্ষক-শিক্ষার্থী যারা বিদেশে আসতে সক্ষম হন না, তাদের গবেষণাধর্মী পেপারগুলোকে আন্তর্জাতিক পাবলিকেশন্সে নিয়ে আসার মাধ্যমে তাদেরকে উৎসাহিত করা, তাদেরকে কনফারেন্সে এনে সচেতনতা সৃষ্টি করা, এটি ছিল মূল উদ্দেশ্য। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আমি যখন ২০০৬ সালে এই কনফারেন্স শুরু করি তখন বাংলাদেশ থেকে একজনও পেতাম না। এখন ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া, সাউথ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক একাডেমিক্স এ কনফারেন্সে আসছেন। তারা নিজস্ব আইডিয়ার সাথে অন্যদেরকে পরিচিত করার সুযোগ পাচ্ছেন। অন্যদের কাছে থেকেও ধারণা নিতে সক্ষম হচ্ছেন। এই কনফারেন্সে বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন ১০ জনের মত শিক্ষাবিদ। কনফারেন্সে শতাধিক শিক্ষাবিদ বিশ্বের ২০টি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা একটি বৈশ্বিক সমাবেশের মধ্যে জ্ঞান অন্বেষণ এবং নেটওয়ার্কিংয়ের এক অপূর্ব সুযোগ পেয়েছিলেন। সম্মেলনের আয়োজক ছিল সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের মেডগার এভার্স কলেজ এবং সেন্টার ফর বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক রিচার্স। সামনের বছর একইস্থানে এই এপ্রিলেই অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ কনফারেন্স। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here