টলিউডের জনপ্রিয় নায়ক দেব আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পেরিয়ে। অভিনয়, প্রযোজনা আর রাজনীতি—সব ক্ষেত্রেই সমান স্বচ্ছন্দ এই অভিনেতা–রাজনীতিকের সাফল্যের পেছনে আছে এক ক্যাটারিং–কর্মীর ছেলের লড়াইয়ের গল্প।
দেবের বাবা গুরুপদ অধিকারী বলিউড সেটে ক্যাটারার হিসেবে কাজ করতেন। কৈশোরে বাবার সহকারী হয়ে সেই সেটেই এঁটো বাসন ধোয়া, ঘর মোছা, টিফিন সামলানো ছিল দেবের নিত্যদিনের কাজ। সেই ব্যস্ত শুটিং সেটেই দীপক অধিকারীর মনে জন্ম নেয় একটাই স্বপ্ন—শাহরুখ খানের মতো নায়ক হওয়ার।
সম্প্রতি অনুরাগ বসুর টক শো ‘কে হবে বিগেস্ট ফ্যান’-এ অংশ নিয়ে সে দিনগুলোর কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন দেব। অনুরাগ বসু বলেন, ‘সব টিফিন শেষে ঘরটা তুমি মুছতে—সেখান থেকে আজ এখানে?’ জবাবে দেব জানান, ‘অনেক বাসন ধুয়েছি। হয়তো আপনার প্লেটও ধুয়েছি। আজ আপনার সামনে বসে আছি—এটাই আমার স্বপ্ন পূরণ।’
অনুরাগ বসুও আবেগ সামলাতে না পেরে দেবকে জড়িয়ে ধরেন। তিনি জানান, দেবের বাবা কখনোই পরিচালকদের কাছে ছেলেকে নিয়ে সুপারিশ করেননি। এ নিয়ে দেব বলেন, ‘মা বাবাকে বলতেন আমার জন্য কারও সঙ্গে কথা বলতে। বাবা বলতেন—আমি খুব ছোট টেকনিশিয়ান। আমিও চাইনি বাবা আমার জন্য কারও কাছে ছোট হোক।’
২০০৬ সালে দেবের চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় ‘অগ্নিশপথ’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। প্রথম ছবি সাড়া না পেলেও ২০০৭ সালের ‘আই লাভ ইউ’ তাকে রাতারাতি তারকা বানায়। এরপর ‘চ্যালেঞ্জ’, ‘পরাণ যায় জ্বালিয়া রে’, ‘খোকাবাবু’, ‘পাগলু’সহ একের পর এক বাণিজ্যিক সফল ছবি তাকে টলিউডের প্রথম সারির নায়কে পরিণত করেছে।
সাম্প্রতিক বছরেও ভিন্নধর্মী চরিত্রে কাজ করে নিজের অবস্থান আরও শক্ত করেছেন দেব। ‘খাদান’, ‘ধূমকেতু’, ‘রঘু ডাকাত’ থেকে শুরু করে নতুন ছবি ‘প্রজাপতি ২’—২০২৫ সালজুড়ে টলিউডের অন্যতম সফল নায়ক ছিলেন তিনি।

