চলতি বছর বিশ্বজুড়েই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ)। এর ফলে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দিতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংস্থাটি।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, চাহিদা প্রতিদিন রেকর্ড ১০ কোটি ২৩ লাখ ব্যারেলে উন্নীত হতে পারে। উন্নয়নশীল বিশ্বের দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলো চাহিদা বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা পালন করবে।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০২৮ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে তিন-চতুর্থাংশ চাহিদাই আসবে এশিয়ার দেশগুলো থেকে। ২০২৭ সাল নাগাদ চাহিদা প্রবৃদ্ধিতে প্রধান উৎস হিসেবে চীনকে ছাড়িয়ে যাবে ভারত। জ্বালানি স্থানান্তর পলিসির কারণে এ সময়ের পুরোটাই উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে সংকোচনমূলক পরিস্থিতির মধ্যে থাকবে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা।
চীনে চলতি বছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা মহামারীপূর্ব অবস্থায় ঘুরে দাঁড়ায়। তবে আগামী বছর চাহিদা প্রবৃদ্ধির হার শ্লথ হয়ে পড়তে পারে। আইইএ জানায়, জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা প্রবৃদ্ধিতে প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে পেট্রোকেমিক্যাল খাত। এর মধ্যে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি), ইথেন ও নাপথা অর্ধেকেরও বেশি চাহিদা বাড়াবে। ৯০ শতাংশ প্রবৃদ্ধিই মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরবে। এভিয়েশন খাতও খুব শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াবে। কারণ চলতি বছর সীমান্ত খুলে দেয়ায় বিমানে ভ্রমণের হার বেড়ে গেছে।
এদিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য পূর্বাভাস কমিয়েছে গোল্ডম্যান স্যাকস। বছর শেষে জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ৮৬ ডলারে নামবে বলে জানিয়েছে বিনিয়োগ ব্যাংকটি। আগের পূর্বাভাসে যা ছিল ৯৫ ডলার। সে হিসাবে দাম কমবে প্রায় ১০ শতাংশ।
এর আগে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ডিসেম্বর নাগাদ গড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮৯ ডলারে নামবে বলে জানিয়েছিল গোল্ডম্যান স্যাকস। সবশেষ পূর্বাভাসে তা কমিয়ে ৮১ ডলার ধরা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, সৌদি আরব অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন ব্যাপক মাত্রায় কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। এর পরও বাজারে জ্বালানিটির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকবে। কারণ চীনে যে হারে চাহিদা বাড়ার প্রত্যাশা করা হয়েছিল সে হারে বাড়ছে না। অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া, ইরান ও ভেনিজুয়েলার জ্বালানি তেল উত্তোলন ও সরবরাহ বেড়েই চলেছে। এসব কারণেই বছরের শেষ নাগাদ জ্বালানি তেলের দাম নিম্নমুখী থাকবে। সূত্র: আইইএ ওয়েবসাইট