ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুসের কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ২১ বছর বয়সী ওমর আব্দুলহাকিম দাউদ নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (স্থানীয় সময়) সালেম গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তাদের অবস্থানের দিকে পাথর নিক্ষেপ করা হলে তারা গুলি চালায়। তবে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ওমর দাউদকে কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই গুলি করা হয়েছে।
ইসরায়েল ১৯৬৭ সাল থেকে পশ্চিম তীর দখল করে রেখেছে। গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালে হামাসের হামলার পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা আরও বেড়েছে। ইসরায়েলি সেনারা জানায়, জানুয়ারির ২১ তারিখ থেকে নাবলুস ও আশপাশের এলাকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার (OCHA) তথ্য অনুযায়ী, এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৭৪ জন ফিলিস্তিনি ও ৩ জন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী ও বসতকারীদের হামলায় অন্তত ৯১১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েলি হিসাব অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে ৩২ জন ইসরায়েলি, যাদের মধ্যে সেনারাও রয়েছে, নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি গ্রামে বসতি স্থাপনকারীদের হামলা
পশ্চিম তীরের খিরবেত আল-মারাজিম গ্রামে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হামলার শিকার হয়েছে ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা। গ্রামবাসী নাসিম মুসলিম জানান, “আমি প্রথমে দরজায় আঘাতের শব্দ শুনি, এরপর জানালায় পাথর নিক্ষেপ করা হয়। কিছুক্ষণ পর আগুনের গন্ধ পাই। মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে পুরো ঘর আগুনে পুড়ে যায়।” এফপিটিভির ধারণ করা ফুটেজে দেখা যায়, গ্রামে বেশ কয়েকটি বাড়ি ও গাড়ি পুড়ে গেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি নাগরিকদের গবাদিপশু চুরি করার চেষ্টা করেছিল, তাই সেনারা দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়।” তবে স্থানীয় ফিলিস্তিনিরা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ইসরায়েলি বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড সহিংসতা চালানোর অভিযোগ তুলেছে।
পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ
আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, ইসরায়েলের পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন সম্পূর্ণ অবৈধ। তবে ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলে বসতি সম্প্রসারণ করে আসছে, যা সংঘাত আরও জটিল করে তুলছে।
পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, যা ভবিষ্যতে আরও সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল