১৫ সেকেন্ডে হৃদ্‌রোগ শনাক্ত করবে এআই স্টেথোস্কোপ

0
১৫ সেকেন্ডে হৃদ্‌রোগ শনাক্ত করবে এআই স্টেথোস্কোপ

হৃদ্‌রোগ শনাক্তকরণে আসছে যুগান্তকারী প্রযুক্তি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিসম্পন্ন একটি স্টেথোস্কোপ উদ্ভাবন করেছেন ব্রিটিশ চিকিৎসকেরা, যা দিয়ে মাত্র ১৫ সেকেন্ডেই তিন ধরনের হৃদ্‌রোগ শনাক্ত করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রযুক্তি হৃদ্‌রোগ চিকিৎসায় একটি বড় পরিবর্তনের সূচনা করবে।

উদ্ভাবনী এই স্টেথোস্কোপটি তৈরি করেছে যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ হেলথকেয়ার এনএইচএস ট্রাস্টের গবেষক দল। তাঁদের দাবি, এই ডিভাইস দিয়ে মুহূর্তেই শনাক্ত করা যাবে হার্ট ফেইলিউর (হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া), হার্ট ভালভের সমস্যা এবং অস্বাভাবিক হার্টবিট।

এই স্টেথোস্কোপের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এটি মানুষের কানে সহজে শোনা না যাওয়া অতিমৃদু হার্টবিট কিংবা রক্তপ্রবাহে সূক্ষ্ম পার্থক্যও শনাক্ত করতে পারে।

সম্প্রতিস্পেনের মাদ্রিদে ইউরোপিয়ান সোসাই টি অব কার্ডিওলজির বার্ষিক সম্মেলনে হাজারো চিকিৎসকের সামনে এ প্রযুক্তির ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। গবেষকরা বলেন, হৃদ্‌রোগ যত দ্রুত শনাক্ত করা যাবে, তত দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হবে এবং অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচানো যাবে।

এই এআই স্টেথোস্কোপ নিয়ে যুক্তরাজ্যের ২০০টি জিপি চেম্বারে প্রায় ১২ হাজার রোগীর উপর পরীক্ষা চালানো হয়। এতে দেখা গেছে, এই যন্ত্র ব্যবহার করে হার্ট ফেইলিউর শনাক্তের সম্ভাবনা দ্বিগুণ, হার্ট ভালভের রোগ শনাক্তের সম্ভাবনা দ্বিগুণ এবং অস্বাভাবিক হার্টবিট শনাক্তের সম্ভাবনা তিন গুণ বেড়েছে।

ইম্পেরিয়াল কলেজের গবেষক ডা. প্যাট্রিক বেশটিগার বলেন, “২০০ বছর ধরে স্টেথোস্কোপের ডিজাইনে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। এখন মাত্র ১৫ সেকেন্ডে এমন স্পষ্ট ফলাফল পাওয়া সত্যিই অসাধারণ।”

উল্লেখ্য, প্রচলিত স্টেথোস্কোপের উদ্ভব হয়েছিল ১৮১৬ সালে, আর এই আধুনিক এআই-চালিত স্টেথোস্কোপটি তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক কোম্পানি ইকো হেলথ। যন্ত্রটির আকার একটি তাসের কার্ডের মতো ছোট এবং সহজে বহনযোগ্য।

তবে, গবেষকেরা সতর্ক করে বলছেন, এ স্টেথোস্কোপ সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নয়, বরং যারা হৃদ্‌রোগের উপসর্গে ভুগছেন, তাদের জন্য উপযোগী।

গবেষক মিহির কেলশিকার বলেন, “সাধারণত যখন রোগ মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছায়, তখনই হার্ট ফেইলিউর শনাক্ত হয়। কিন্তু এই প্রযুক্তি সেই পরিস্থিতি বদলে দিতে পারে।”

ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর ডা. সোনিয়া বাবু-নারায়ণ এ প্রযুক্তিকে ‘অগ্রণী পদক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “আগেভাগেই যদি রোগ ধরা পড়ে, তাহলে দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে রোগীদের সুস্থ রাখা সম্ভব হবে।”

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here