প্রথম নারী সভাপতি পেতে পারে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি

0
প্রথম নারী সভাপতি পেতে পারে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি

ভারতের কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে এখনও অচলাবস্থা রয়ে গেছে। বিজেপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে এনিয়ে বৈঠক হলেও নতুন সভাপতির নাম নিয়ে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারে নি মোদি-অমিত শাহের দল। 

এরকম এক আবহে জল্পনা ছড়িয়েছে দলের শীর্ষ পদে এবার হয়তো বসানো হতে পারে কোন নারীকে। অন্তত দলীয় সূত্রে এমনটাই খবর। 

বর্তমান সভাপতি জয় প্রকাশ নাড্ডার মেয়াদ শেষ হয় গত ২০২৩ সালে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে তার কার্যকালের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরইমধ্যে দল ক্ষমতায় আসার পর কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। 

কিন্তু এবার দলে একজন স্থায়ী সভাপতি হিসাবে বেছে নেওয়ার জন্য দলের সিনিয়র নেতারা দফায় দফায় আলোচনা করছেন। আর সেখানেই বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট নারী রাজনীতিবিদকে শীর্ষ পদের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে- যার মধ্যে শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে রয়েছেন নির্মলা সীতারামন, ডি পুরন্দেশ্বরী এবং ভানথি শ্রীনিবাসনের মতো নেত্রীরা। 

বিজেপির সভাপতির পদের দৌড়ে শীর্ষ রয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সম্প্রতি দিল্লিতে দলের সদর দপ্তরে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষের সাথে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। মূলত তার বিস্তৃত অভিজ্ঞতা এবং নেতৃত্ব প্রদানের সম্ভাবনার দিকে তাকিয়েই একজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হচ্ছে নির্মলাকে। 

দলীয় সূত্রে খবর, যদি সীতারমনকে নিযুক্ত করা হয়, তাহলে দক্ষিণ ভারতে বিজেপির অবস্থান আরও বিস্তৃত করতে সাহায্য করতে পারে। লোকসভায় নারীদের জন্য যে ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের প্রস্তাব রাখা আছে, তাতে সীতারমনের নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষমতা বিজেপির সেই লক্ষ্যকে সামঞ্জস্যপূর্ণতা দিতে পারে। কারণ সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা সীতারমনের দলীয় সংগঠনেও নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। 

অন্যদিকে ডি পুরন্দেশ্বরী হলেন বিজেপির অন্ধ্র প্রদেশের সাবেক রাজ্য সভাপতি। বহুভাষিক নেত্রী, পুরন্দেশ্বরী রাজনৈতিকভাবে এক বিশিষ্ট কর্মজীবনের অধিকারী। ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর পর ভারত সরকারের তরফে বিদেশে যে প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছিল, সে প্রতিনিধিদলেরও অন্যতম সদস্য ছিলেন পুরন্দেশ্বরী। 

এই পদের জন্য ভানথি শ্রীনিবাসনের নামও বিবেচনা করা হচ্ছে। তামিলনাড়ুর আইনজীবী থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া ভানথি বর্তমানে রাজ্য বিধানসভায় কোয়েম্বাটুর দক্ষিণ কেন্দ্রের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন। ১৯৯৩ সালে বিজেপিতে যোগদানের পর থেকে দলের রাজ্য সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক এবং তামিলনাড়ুর সহ-সভাপতি সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ভানথি। ২০২০ সালে দল তাকে বিজেপি নারী মোর্চার জাতীয় সভাপতি নিযুক্ত করে। ২০২২ সালে তিনি বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির সদস্য হন- সেক্ষেত্রে এই পদে তামিল মহিলা হিসাবে তিনিই প্রথম।

সূত্রে খবর যে, একজন নারী নেতৃত্বের প্রতীকী এবং কৌশলগত সুবিধা উভয়কেই স্বীকৃতি দিয়ে দলের শীর্ষ পদে একজন মহিলাকে নিয়োগের চিন্তাভাবনাকে সমর্থন দিয়েছে ‘রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ’ (আরএসএস)। কারণ সাম্প্রতিক কালে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা এবং দিল্লির মতো রাজ্যে, বিজেপির জয় নিশ্চিত করতে মহিলা ভোটাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

যদি বিজেপি এই পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথম বারের মতো একজন মহিলাকে দলের শীর্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here