ছিনতাইয়ের সালিশ নিয়ে বিরোধের জেরে তিনজনকে গণপিটুনিতে হত্যা

0
ছিনতাইয়ের সালিশ নিয়ে বিরোধের জেরে তিনজনকে গণপিটুনিতে হত্যা

কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক ও ছিনতাই নিয়ে সালিশের বিরোধ থেকে স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং মেম্বারের গায়ে হাত তোলা হয়। এ নিয়ে একই পরিবারের তিনজনকে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন-কড়ইবাড়ি গ্রামের হাবিবুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম রুবি (৫৭), রুবির মেয়ে তাসপিয়া আক্তার হ্যাপি ওরফে জোনাকি (২৯) ও ছেলে মো. রাসেল মিয়া (৩৫)। এ ঘটনায় রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তারকে (২৭) গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত জোনাকির স্বামী হায়দারাবাদ গ্রামের আবদুল হামিদের ছেলে মনির হোসেন। মনির হোসেন, নিহত তিনজন ও হাবিবুর রহমানের আরেক মেয়েসহ তাদের পরিবারের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের ৪৩টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে নিহত তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ৩০টি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সাততলা ভবনের বেশির ভাগ জানালার কাচ ভাঙা। তিনটি স্থানে ছোপছোপ রক্তের দাগ। বাড়ির আঙিনায় একটি মোটরসাইকেল ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে। বাইরে অসংখ্য মানুষের জটলা।
নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার জানান, এক যুবক মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে ধরা পড়ে। গত পরশু বিষয়টি সুরাহার জন্য সবাই বসে। আমার শাশুড়ি বিষয়টি নিয়ে কথা বললে, স্থানীয় বাছিরের সঙ্গে ঝামেলা হয়। বাছির আমার শাশুড়ি ও ননদকে মারধর করে। এ সময় তর্কাতর্কি ও ঝামেলার এক পর্যায়ে আমার এক বছরেরও কম বয়সী মেয়ের হাত ভেঙে দেয় তারা। আমার স্বামী তখন বাইরে ছিল। তিনি এটি জানতে পারার পর খুবই উত্তেজিত হয়ে যান। এ নিয়ে খুব ঝামেলা হয়। তবে ওইদিন রাতের মধ্যে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে এক-দেড়শ লোক বাঁশ ও ছুরি নিয়ে হাজির হন। তারা প্রথমে ঘরের ভেতর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপর ঘরে ঢুকে আমার শাশুড়িকে হত্যা করেন। ঘরের বাইরে নাশতার জন্য যাওয়া ননদকেও হত্যা করা হয়। এরপর আলমারিতে লুকিয়ে থাকা স্বামীকেও হত্যা করেন তারা। আমার স্বামী ছোট সন্তানের জন্য বারবার প্রাণভিক্ষা চাইলেও লাভ হয়নি। এখনও পর্যন্ত আমার শ্বশুর নিখোঁজ। আমি এ ঘটনায় মামলা করব।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খাঁন জানান, নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতদের বিরুদ্ধে যতই অভিযোগ থাকুক, এভাবে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। যারা হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here