ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করে অস্ত্র সংকটে পড়েছে ইসরায়েল: এনবিসি

0
ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করে অস্ত্র সংকটে পড়েছে ইসরায়েল: এনবিসি

ইরানের সঙ্গে টানা ১২ দিনের যুদ্ধের পর ইসরায়েল বর্তমানে অস্ত্র ও গোলাবারুদের ঘাটতির মুখে পড়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন প্রশাসনের অজ্ঞাতনামা দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনেটিতে বলা হয়, ইসরায়েলের অস্ত্রভাণ্ডারে গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম ও গোলাবারুদের সংকট দেখা দিয়েছে।

এছাড়া আরও তিন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল এখন ‘গুরুত্বপূর্ণ কিছু অস্ত্রে বিশেষভাবে কমতি’ অনুভব করছে।
এমন সময় এই তথ্য সামনে এল যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। কাতারের সহায়তায় যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও এটি এখনও নাজুক অবস্থায় রয়েছে, তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা কার্যকর ছিল।

ইসরায়েল তাদের অস্ত্র ঘাটতির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনও মন্তব্য করেনি।

প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে। ইরানের হামলার সময় ইসরায়েলকে প্রতিরক্ষা সহায়তা দিতে এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয়ভাবে সহায়তা করেছে বলেও এনবিসি জানিয়েছে।

গত ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে গোপনে পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনার অভিযোগ তুলে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। একই দিনে ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ নামে ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনাগুলোয় পাল্টা অভিযান শুরু করে।

যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে সামরিক উদ্দেশ্য থাকার অভিযোগ আনলেও তেহরান বারবার এটি অস্বীকার করেছে। গত ১৮ জুন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসিও জানান, ইরানের কোনও সক্রিয় পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির সুনির্দিষ্ট প্রমাণ তাদের হাতে নেই।

এরপর ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে। এ ঘটনার জবাবে সোমবার ইরান যুক্তরাষ্ট্রের কাতারে অবস্থিত আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র মাঝপথেই প্রতিহত করা হয়েছিল এবং এতে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

ইরান হামলা করবে সেটি কাতারকে আগেই জানানো হয়। বিষয়টিকে অস্বাভাবিক হিসেবে নেননি বলে জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইদিন যুক্তরাষ্ট্র সময় রাতে তিনি জানান, ইসরায়েল ও ইরান ১২ দিন ধরে চলা যুদ্ধ শেষ করতে একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি জানান, দুই দেশের যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর হয়েছে। কিন্তু ‘চুক্তির’ বিষয়টি নাকচ করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, ইরসায়েল আগ্রাসন শুরু করলে সঙ্গে সঙ্গে জবাব দেওয়া হবে।  

যুদ্ধবিরতি বা এ ধরনের কোনও চুক্তির বিষয়ে স্বীকার করেনটি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিও। তিনি এ বিষয়ে কোনও বক্তব্য এখন পর্যন্ত দেননি।  

ইসরায়েল যে অস্ত্রঘাটতিতে ভুগছে তা স্বীকার করেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক সিরিয়া বিষয়ক দূত পিটার ফোর্ডও। তিনি রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা রিয়া নভোস্তিকে বলেন, যুদ্ধবিরতিতে কিছু লঙ্ঘন হলেও এটি টিকে থাকার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, ইসরায়েল বর্তমানে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো সামরিক সক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে না এবং শান্তির প্রয়োজন তাদেরই বেশি। সূত্র: এনবিসি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here